২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কিডনি রোগী হবে ৫০ লাখ - সারাবাংলা

পরিবেশ দূষণের ফলে দেশে ক্যানসার, কিডনিসহ নানারকম দূরারোগ্য রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ৫০ লাখে দাঁড়াবে। এতে করে আমাদের দেশে কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়— ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবসের এক অনুষ্ঠানে এভাবেই বলছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোওয়ারী।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দিবস উপলক্ষে সিদ্বেশরী রোড থেকে বেইলি রোড পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রা শেষে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অডিটোরিয়ামে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. ইউনুস মিয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহিদ আখতার হোসেন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ফাতিনাজ ফিরোজ, ইউএসএআইডি পক্ষে আশরাফুল হক, ইউএস ফরেস্ট সার্ভিস ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামের পক্ষে জাস্টিন গ্রিন এবং ড. আবু মোস্তফা কামাল উদ্দিন।
সেমিনারে আলোচক হিসাবে আরেও বক্তৃতা করেন- স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা, সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, সিনিয়র প্রভাষক মাহমুদা ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মারুফা গুলশান আরা এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি রিসার্চ ফেলো হুমায়ূন কবির।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা পরিবেশ দূষণ মহামারির মধ্যে বসবাস করছি। পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে আমরা সোচ্চার নই। সরকারি এবং বেসরকারি উভয়পক্ষই বৈশ্বিকভাবে দূষণের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারছি না। আবার স্থানীয়ভাবে আমরা যে পরিমাণ দূষণ করছি তাও ধারণার বাইরে। ফলে দূরারোগ্য অনেক ব্যাধি বাড়ছে। যা আমাদের পরিবেশ দূষণের ফল।’

সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার ওজোন স্তর কীভাবে ক্ষয় হয় তার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বায়ূমণ্ডলের ওজোন স্তর আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে মানুষ, উদ্ভিদ, প্রাণী তথা পরিবেশ-প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা ধনীরাই মূলত পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। আমরা বাসা, অফিস ও গাড়িতে শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহার করি। যা থেকে সিএফসি (CFC) গ্যাস নির্গত হয়। ফলে ওজোন স্তরের ক্ষতি হয়। বিশ্বব্যাপী সহযোগিতাই পারে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষা করতে। এক্ষেত্রে যুবকদেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’

অধ্যাপক ড. শহীদ আখতার হোসেন বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোই সিএফসি (CFC) গ্যাস নির্গমনের জন্য প্রধানত দায়ী। এদের জন্য অনুন্নত দেশগুলো ভুক্তিভোগী হতে পারে না।’

অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা তার উপস্থাপনার মাধ্যমে উদ্ভিদ, প্রানী ও পরিবেশ উপর ওজোন স্তরের ক্ষয় ও অতি বেগুনি রশ্মির বিরূপ প্রভাব তুলে ধরেন।

ব্যারিস্টার মারুফা গুলশান আরা বলেন, ‘ওজোন স্তর ক্ষয় রোধে মন্ট্রিল প্রোটোকল ও ইইউ রেগুলেশন মান্য করার বিকল্প নেই। এর মাধ্যমেই ওজোন স্তর ক্ষয়ের প্রতিকার করা সম্ভব।’

আশরাফুল হক বলেন, ‘জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি আমাদের পরিপালন করা দরকার। যদি আমরা এক্ষেত্রে সচেতন না হই তবে পরিবেশের দূষণের দ্বায় আমাদেরই নিতে হবে।’

ড. মাহমুদা পারভীন বলেন, ‘ক্রমাগত ওজোন স্তরের ক্ষয়ের ফলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে চলে আসে। এর প্রভাব হতে আমাদের চোখকে নিরাপদে রাখতে সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত।’

Source- সারাবাংলা